ঢাকা || ১৭ মে ২০২৪

ভূমি সেক্টরে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করার ক্ষেত্র চিহ্নিত করুন

ভূমি সেক্টরে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করার ক্ষেত্র চিহ্নিত করুন

ব্যাংক ইনফো

প্রকাশিত: ১২:৪৪, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

ভূমি সেক্টরে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করার ক্ষেত্র চিহ্নিত করার জন্য ভূমি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ আজ সোমবার সকালে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভূমি সংস্কার বোর্ড আয়োজিত ‘দুর্নীতিমুক্ত স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক কর্মশালায়' প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশ দেন। ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল বিপিএএ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জাকির হোসেন-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ, সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মোঃ আবু জাফর এবং রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।

ভূমিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যর আরও বলেন, গ্রামীণ কিংবা মফস্বলে অবস্থিত পতিত কিংবা অনাবাদি জমি, উর্বর কৃষি জমি, আবাসিক, বিলাসবহুল, শিল্প কিংবা শহরের বাণিজ্যিক এলাকার জমির ই-নামজারি ফি একই হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন জমির ব্যবহার ও মূল্যভিত্তিক ই-নামজারি নির্ধারণের আইনি দিক পরীক্ষা করারও নির্দেশ দেন ভূমিমন্ত্রী। তিনি এসময় জানান ভূমি উন্নয়ন কর ও নামজারি ব্যবস্থা ডিজিটাইজেশনের ফলে ভূমি খাতে রাজস্ব আদায় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

ভূমিমন্ত্রী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, সারা দেশে খাস জমি, খাল-বিল ও জলমহাল চিহ্নিত করতে হবে এবং ভূমি ডাটা ব্যাংকে এসবের পূর্ণাঙ্গ তথ্য আপলোড করতে হবে। তিনি আরো বলেন অবৈধ দখলে থাকা খাস জমি উদ্ধার করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া ভরাট হয়ে যাওয়া খাল-বিল পুনঃ-খননের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ভূমিমন্ত্রী নাগরিকদের ভূমি বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন যোগাযোগ ও প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেন। ভূমিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনের কথা কেবল মুখে বললে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিলে হবেনা, জাতির পিতার দর্শন হৃদয়ে ধারণ করে কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।

কর্মশালায় ভূমি মন্ত্রণালয়, ভূমি সংস্কার বোর্ডের কর্মকর্তাসহ রংপুর ও গাইবান্ধা কালেক্টরেটের (জেলা প্রশাসন) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) (এডিসি রেভিনিউ), ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি) (এসিল্যান্ড), ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞগণ রিসোর্স পারসন হিসেবে সেশন পরিচালনা করেন। উল্লেখ্য, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলা ভূমি মন্ত্রণালয়ের ১৮০ দিনের বিশেষ কর্মসূচির আওতাভুক্ত।

-----

এর পর রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় কমপ্লেক্সে অবস্থিত রংপুর উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনারের কার্যালয় পরিদর্শন করেন। এসময় ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জাকির হোসেন এবং উপ ভূমি সংস্কার কমিশনার মোঃ রেজাউল কবীরসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময়, রংপুরের উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনার আবু জাফর রাশেদ ভূমিমন্ত্রীকে উপ-ভূমি সংস্কার কার্যালয়ের কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ে অবহিত করেন। এ সময় ভূমিমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় ১৮০ দিনের  কর্মসূচি   সফল করার দৃঢ় পদক্ষেপগ্রহণের নির্দেশ দেন।

অন্যান্যদের মধ্যে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয় এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ।

------

উল্লেখ্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স এবং সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার স্মার্ট ভূমিসেবা বাস্তবায়নে গতি আনতে ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দের নির্দেশে ১৮০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এই কর্মসূচির আওতায় জনবান্ধব ভূমিসেবা প্রদান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসসমূহকে নিবিড় তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণে আনা হয়েছে।

নির্বাচিত ভূমি অফিসের কার্যক্রম নিবিড় তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে ১৮০ দিনের বিশেষ কর্মসূচির কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর একটি টেকসই মডেল দাঁড় করিয়ে এই কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হবে। ১৮০ দিনের কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রাথমিকভাবে সারা দেশে ১৬টি জেলা, ৩২টি উপজেলা ও ৬৪টি ইউনিয়ন/সার্কেল ভূমি অফিস নির্বাচিত করা হয়েছে। এরমধ্যে রংপুরে নির্বাচিত ভূমি আফিস হচ্ছে:

রংপুর জেলার রংপুর মহানগর সার্কেল, মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিস; এবং শালবন পৌর ভূমি অফিস, উত্তম, শঠিবাড়ী, জায়গীরহাট,পীরগঞ্জ, ও চতরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস।

গাইবান্ধা জেলার গাইবান্ধা সদর, গোবিন্দগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলা ভূমি অফিস; এবং কামারজানী, দাড়িয়াপুর, খানসিংপুর, কাটাবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ, এরেন্ডাবাড়ী, ও বাগুড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস।