ঢাকা || ০২ মে ২০২৪

সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা

সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা

২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকে সরকারের ঋণ ২৬ হাজার ৩শ কোটি ১৮ লাখ টাকা বেড়েছে। তবে একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ২৩ হাজার ২৭০ কোটি ৩২লাখ টাকা আবার পরিশোধও করেছে। 


ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ব্যাংক ঋণ নেমে এসেছে ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮৬ লাখ টাকায়। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৬ হাজার ৬৫৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ২১ হাজার ৮৩ কোটি টাকা কমেছে।

তিনমাসে ঋনের পরিমান ছিল ৪৪ হাজার ৩৫৩ কোটি ৫লাখ টাকা। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সরকারের ঋণ ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৬৯ কোটি ৫১ লাখ থেকে বেড়ে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৭৭২ কোটি ৭লাখ টাকায় দাড়িয়েছে। 



কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন সরকারের ব্যাংক ঋণ কমেছে মুলত সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে। তবে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করায় বাজারে তারল্য সরবরাহ কমে যেতে পারে। বাজারে তারল্য সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে টাকা দিচ্ছে। এতে উচ্চ বাজার থেকে শক্তির অর্থ কমে যাবে। যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।  তফসিলী ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের বিষয়ে, তিনি বলেন, নীতিমালা শিথিলকরণ এবং রিজার্ভ বৃদ্ধির প্রভাব হিসাবে ব্যাংকগুলোর কাছে পর্যাপ্ত তারল্য ছিল। রির্জাভ বৃদ্ধির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা বাজারে ছেড়েছে।  সরকারের ব্যাংক ঋণ কমার কারণে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। দেশব্যাপী বন্যার কারণে ব্যয় কম হওয়ার কারণে সরকারের ঋণ কম হতে পারে। 

ড. আহসান বলেন, সাম্প্রতিক সময় সরকার অনেক বিদেশী অর্থ পেয়েছে। একারণেও ব্যাংক ঋণ কমেছে। তবে সরকারের ব্যয় যখন বাড়বে তখন আবার ব্যাংক ঋণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সুত্র বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা পরিশোধের পরও সরকারের কাছে ১২হাজার কোটি টাকা রয়েছে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, ঋণের সুদহার ৯শতাংশ নির্ধারণ করায় আমানতের সুদহার অনেক কমে গেছে। এরফলে আমানতকারীরা ব্যাংকের পরিবর্তে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছে। চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ৭ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ৪০ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও ১০ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা কমে আদায় হয়েছে ৩০ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা।   

দুইমাসে রাজস্ব আদায়ের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০দশমিক ১৬শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ধরা হয়েছে ১লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। 

ঘাটতি অর্থায়নের জন্য সরকার ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহ করবে। এর মধ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সংগ্রহ করবে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।