
বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাস এবং সহনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে পিকেএসএফ-কে (পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন) সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ১৩ মে পিকেএসএফ ভবনে অনুষ্ঠিত ‘দারিদ্র্য হ্রাসের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ঝুঁকি প্রশমন কর্মসূচি প্রকল্পের ৪র্থ যৌথ সমন্বয় কমিটি সভায়।
সভায় সূচনাপর্বে পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফজলুল কাদের বলেন, “স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীকে বীমার আওতায় আনতে আমাদের উদ্ভাবনী পথে হাঁটতে হবে। মাইক্রোবীমা শুধু একটি আর্থিক পণ্য নয়, এটি একটি উন্নয়নমূলক হাতিয়ার।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো এমন ঝুঁকিগুলো কমানো যা মানুষের আয়ে প্রভাব ফেলে। এই ঝুঁকি হ্রাস করতে পারলে টেকসইভাবে মানুষের নিট আয় বৃদ্ধি সম্ভব।” তিনি ঝুঁকি হ্রাসমূলক আচরণকে উৎসাহিত করতে ‘নাজিং’ কৌশল ব্যবহারের ওপর জোর দেন এবং জাইকার সহায়তায় অ্যাকচুয়ারিয়াল বিজ্ঞান, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহে সক্ষমতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
জাইকার ঢাকা অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ-এর বিশেষ উপদেষ্টা কিয়োশি আমাদা বলেন, “পিকেএসএফ-এর অভিজ্ঞতা এবং তৃণমূলে কাজ করার দক্ষতা অনন্য। জাইকা আগ্রহের সঙ্গে পিকেএসএফ-এর সঙ্গে কাজ করে যেতে চায়।” তিনি আরও বলেন, পিকেএসএফ-এর মাইক্রোবীমা মডেলটি অন্যদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে।
জাপান থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত হয়ে জাইকার হেডকোয়ার্টারের ডিরেক্টর (লিঙ্গ সমতা ও দারিদ্র্য হ্রাস) মিজ কোমাহাশি রিয়ে পিকেএসএফ এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলোর চমৎকার কাজের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “এই মহৎ কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে, সেই আশা রাখি এবং উদ্যোগের অধীনে জাইকা ভবিষ্যতেও সহযোগিতা করে যেতে চায়।” তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে একটি শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের কামনা করেন।
টিম লিডার ইয়োজিরো ফুজিওয়ারা বলেন, “আমাদের এমন একটি উদ্ভাবনী পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে, যেখানে পিকেএসএফ এবং তার সহযোগী সংস্থাগুলো টেকসই বীমা সমাধান দিতে পারে, শুধুমাত্র পার্টনার-এজেন্ট মডেলের ওপর নির্ভর না করে।”
সভা শেষে মোঃ ফজলুল কাদের বলেন, “পিকেএসএফ তার মূল কার্যক্রমকে শক্তিশালী করতে প্রকল্প গ্রহণ করে এবং অভিজ্ঞতা আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে পরিচালিত করবে।” তিনি আরও জানান যে প্রিসিশন এগ্রিকালচারে কাজ করছে জেনে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, কারণ এটি একটি ঝুঁকি হ্রাসের উপায় এবং জলবায়ু ও পরিবেশগত ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দেয়। তিনি বলেন, “জাপানের প্রিসিশন এগ্রিকালচারের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতি উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।”