ঢাকা || ১৭ অক্টোবর ২০২৫

এমআরটি লাইন-৫ (দক্ষিণ): অনুমোদন ঝুলে থাকায় এডিবির তহবিল ঝুঁকিতে

এমআরটি লাইন-৫ (দক্ষিণ): অনুমোদন ঝুলে থাকায় এডিবির তহবিল ঝুঁকিতে

ব্যাংক ইনফো

প্রকাশিত: ০০:৩০, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর যানজট নিরসনে প্রস্তাবিত মেট্রোরেল লাইন-৫ (দক্ষিণ) প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রকল্পটির অনুমোদন প্রক্রিয়া মাঝপথে আটকে থাকায় অর্থায়নকারী সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) উদ্বেগ জানিয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ম্যানিলাভিত্তিক এডিবি সরকারকে জানিয়েছে—২০২৫ সালের পর এই প্রকল্পের জন্য সংস্থাটির বরাদ্দ তহবিল শেষ হয়ে যাবে, যদি চলতি বছরই নির্মাণকাজ শুরু না হয়।

সম্প্রতি এডিবি, ইআরডি ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার মধ্যে অনুষ্ঠিত এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এমন তথ্য জানানো হয়।

ইআরডির এক সিনিয়র কর্মকর্তা দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-কে বলেন, “আমরা পরিকল্পনা কমিশনের (পিসি) অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। প্রকল্পের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) অনুমোদন পেলেই এডিবি ও সহ-অর্থায়নকারী কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তি করা হবে।”

তবে জানা গেছে, প্রায় ৪ হাজার ৭৭২ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি এখনো জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের অনুমতি পায়নি। যদিও প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) ইতোমধ্যেই একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, সামগ্রিক অর্থনৈতিক চাপে সরকার আপাতত উচ্চব্যয়ী মেগা প্রকল্প হাতে নিতে অনিচ্ছুক।

প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে এডিবি ও কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক মিলে প্রায় ৩ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা অর্থায়নের আশ্বাস দিয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে।

প্রস্তাবিত মেট্রোরেল লাইনটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭.৪ কিলোমিটার। রুটটি হবে গাবতলী–কল্যাণপুর–মিরপুর রোড–পান্থপথ–কারওয়ান বাজার–হাতিরঝিল–আফতাবনগর–দাশেরকান্দি পর্যন্ত। এর মধ্যে গাবতলী থেকে আফতাবনগর পর্যন্ত ১২.৮ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ অংশে ১২টি স্টেশন থাকবে, আর অবশিষ্ট অংশে থাকবে ৪টি উঁচু স্টেশন।

ডিপিপিতে বলা হয়েছে, ২০৩১ সালে এই মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত প্রায় ১৯,৫০০ যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম হবে, যেখানে ট্রেন চলবে প্রতি ৪.৫ মিনিট অন্তর।

ইআরডির আরেক কর্মকর্তা জানান, এডিবির সঙ্গে প্রকল্প সংক্রান্ত আলোচনা এক বছর আগে শেষ হয়েছে। কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গেও সব ধরনের আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে।

“কিন্তু ডিপিপি অনুমোদন না পাওয়ায় এখনো ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি,” তিনি যোগ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের নভেম্বরে এডিবি মেট্রোরেল লাইন-৫ (দক্ষিণ রুট) নকশা তৈরির জন্য ৩৩.২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি সহজ শর্তের ঋণ অনুমোদন করে। এই অর্থে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই, প্রকৌশল নকশা প্রণয়ন এবং দরপত্র প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়।

এদিকে, এডিবি ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ পোর্টফোলিওর ২০২৬ অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত তহবিলের পরিকল্পনাও সম্পন্ন করেছে। তবে সময়মতো প্রকল্পটি শুরু না হলে এই অর্থায়ন হারানোর ঝুঁকি রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।