ঢাকা || ১৭ অক্টোবর ২০২৫

বে টার্মিনাল’ নির্মাণ শুরু হচ্ছে এ বছরই

বে টার্মিনাল’ নির্মাণ শুরু হচ্ছে এ বছরই

ব্যাংক ইনফো

প্রকাশিত: ০১:০০, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরে বহুল প্রতীক্ষিত বে টার্মিনাল নির্মাণকাজ এ বছরই শুরু হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এটি হবে বাংলাদেশের সামুদ্রিক বাণিজ্যের নতুন প্রবেশদ্বার—যা দেশের বন্দর অবকাঠামো ও লজিস্টিক খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই বৃহৎ প্রকল্পটি ২০৩১ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। ইতিমধ্যে বে টার্মিনালের ব্রেকওয়াটার নির্মাণ ও অ্যাকসেস চ্যানেল খনন কাজের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সিপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, “বে টার্মিনালই হবে দেশের ভবিষ্যৎ বন্দর। এটি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।”

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পটি বাংলাদেশের শিপিং ও লজিস্টিক খাতে এক বড় রূপান্তর আনবে। টার্মিনালটি চালু হলে বড় আকারের জাহাজ সরাসরি নোঙর করতে পারবে, জাহাজের অবস্থানকাল কমবে এবং আমদানি-রপ্তানির ব্যয়ও হ্রাস পাবে।

প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থায়ন: 
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) চলতি বছরের ২০ এপ্রিল প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়, যার মধ্যে ব্রেকওয়াটার ও অ্যাকসেস চ্যানেল নির্মাণের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

একনেক ১৩,৫২৫ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করেছে, যা বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনার ভিত্তি গড়ে তুলবে। দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার পর কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় প্রকল্পটি পুনরায় সচল করা হয়।

আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব

চট্টগ্রাম বন্দর বর্তমানে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে দুটি কনটেইনার টার্মিনাল—কনটেইনার টার্মিনাল-১ ও টার্মিনাল-২—নির্মাণ করছে, যেখানে পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওয়ার্ল্ড অংশ নিচ্ছে।
অন্যদিকে, ২৩ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বে টার্মিনালের ব্রেকওয়াটার নির্মাণে আলাদা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন,  “কার্যকর ব্যবস্থাপনা, অটোমেশন ও অপারেশনাল দক্ষতার মাধ্যমে আমরা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।”

বে টার্মিনালের কাঠামো ও সম্ভাবনা
পটেঙ্গা উপকূলে প্রায় ৯০০ একর জমির ওপর নির্মিতব্য বে টার্মিনালে আধুনিক বন্দরের সব সুবিধা থাকবে। এখানে এমন বড় জাহাজ নোঙর করতে পারবে, যেগুলো বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারে না।

টার্মিনালটি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বর্তমান ৩.১ মিলিয়ন টিইইউ থেকে বেড়ে ৫ মিলিয়ন টিইইউ-তে উন্নীত হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বে টার্মিনাল পূর্ণ সক্ষমতায় চালু হলে এটি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ২-৩ শতাংশ পর্যন্ত অবদান রাখতে পারে এবং দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।