ঢাকা || ২৮ আগস্ট ২০২৫

জুলাইয়ে উন্নয়ন ব্যয় ১ শতাংশের নিচে, উদ্বেগ প্রকাশ পরিকল্পনা উপদেষ্টার

জুলাইয়ে উন্নয়ন ব্যয় ১ শতাংশের নিচে, উদ্বেগ প্রকাশ পরিকল্পনা উপদেষ্টার

ব্যাংক ইনফো

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ১৮ আগস্ট ২০২৫

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই শেষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ব্যয় দাঁড়িয়েছে বরাদ্দের ১ শতাংশেরও কম। এ ধীরগতি পরিকল্পনা উপদেষ্টা প্রফেসর ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে উদ্বিগ্ন করেছে

গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,
“এটা ভালো লক্ষণ নয়। গত বছরের নানা অজুহাতে বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়েছিল। কিন্তু এবার আর সে অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না।”

তিনি জানান, চলতি বছরের এডিপি ইচ্ছাকৃতভাবেই বাস্তবায়নযোগ্য মাত্রায় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবুও গতি না বাড়া উদ্বেগজনক।

প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থবিরতা

উপদেষ্টা জানান, অনেক প্রকল্পে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ হয়নি, আবার বহু প্রকল্প পরিচালককে বদলি বা পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলে বাস্তবায়নে গতি আসছে না।
তিনি সকল মন্ত্রণালয়কে দ্রুত কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।

বিলম্বিত সংশোধিত এডিপি

বাংলাদেশের পরিকল্পনা প্রক্রিয়ার একটি বড় দুর্বলতা হলো সংশোধিত এডিপি (আরএডিপি) অনুমোদনে বিলম্ব, বলেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সাধারণত মার্চ-এপ্রিলে আরএডিপি হয়, যখন বোঝা যায় কারও বরাদ্দ অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে, আবার অন্যরা অতিরিক্ত ব্যয় করছে।

তিনি জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এ বছর ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতেই আরএডিপি দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
“নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে পূর্ণ বাজেটের একটি রূপরেখা থাকা উচিত,” তিনি যোগ করেন।

প্রকল্প অনুমোদন

গতকালের বৈঠকে মোট ৯ হাজার ৩৬২ কোটি টাকার ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫টি নতুন, ৩টির ব্যয় বৃদ্ধি করে সংশোধন, আর ৩টির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ব্যয় না বাড়িয়ে।

সবচেয়ে আলোচিত প্রকল্প হলো ২০১৪ সালে শুরু হওয়া ‘এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই’, যার ব্যয় প্রায় ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮২৪ কোটিতে। বারবার বিলম্ব ও ব্যয় বৃদ্ধিতে প্রশ্ন উঠেছে প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে।

উপদেষ্টা জানান, এ বিষয়ে শর্তসাপেক্ষে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে এবং বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) বিশেষ তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
“কেন এত বিলম্ব হলো, কী অনিয়ম ছিল, কেন ঘন ঘন সংশোধন হয়—এসব বের করে ভবিষ্যৎ প্রকল্পে শিক্ষা নেওয়াই লক্ষ্য,” বলেন তিনি।

ব্যয় বৃদ্ধির কারণ

প্রকল্প নথি অনুযায়ী, ব্যয় বাড়ার পেছনে ভূমি অধিগ্রহণ খরচ, প্রকল্প এলাকা সম্প্রসারণ, সুদ পরিশোধ বৃদ্ধি ও টাকার অবমূল্যায়ন অন্যতম কারণ। শুধু মুদ্রার অবমূল্যায়নেই ব্যয় বেড়েছে প্রায় ১ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা, যা মোট বৃদ্ধির ৪২ শতাংশ।

২০১৩ সালে প্রকল্প অনুমোদনের সময় এক ডলার সমান ছিল ৮২ টাকা। বর্তমানে তা প্রায় ১২০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।